সাধারণত ৮ মাস বয়স থেকেই বাচ্চারা নিজ হাতে খাবার মুখে দেওয়ার চেষ্টা করে। তখন খাবার অথবা বাচ্চার জামাকাপড় নষ্ট হওয়ার ভয়ে মা বা পরিবারের কোনও সদস্য তাদের খেতে সাহায্য করেন। কিন্তু এটিই সঠিক সময়, যখন আপনি নিজের সন্তানকে নিজে থেকে খাবার খাওয়ার প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরে তাদের নিজের খাবার নিজে খাওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। 

চলুন জেনে আসা যাক কীভাবে প্রশিক্ষণ দিবেনঃ

  • খাবারের প্রতি বাচ্চাদের নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ থাকে। বাচ্চারা নানান শাক-সবজি নিয়ে নিলেও সব খেতে পারে না। আবার তাদের জোর করে কিছু খাওয়াতে গেলে নিজ থেকে খেতেও চাইবে না। তাই তাদের পছন্দের খাবার পরিবেশন করুন। এর ফলে বাচ্চাদের মধ্যে খাওয়ার প্রতি রুচি বাড়বে এবং তারা নিজে থেকে খাবার খাওয়ার উৎসাহ বোধ করবে।
  • ​অধিকাংশ সময় ছোট বাচ্চারা অর্ধ তরল খাবার খেয়ে থাকে, যেমন- খিচুড়ি, পায়েস, দই, দালিয়া ইত্যাদি। এর ফলে তারা নিজে থেকে শিখতে সময় নেয়। কারণ এ ধরনের অর্ধ তরল খাবার খাওয়ার জন্য চামচ ধরা, চামচ সোজা রেখে খাবার মুখে ভরা ইত্যাদি শিখতে হয়। বাচ্চাদের কাছে এই কায়দা কঠিন মনে হতে পারে। তাই তাদের এমন কিছু খাবার দিন, যা তারা মুঠোয় ধরে রেখে খেতে পারে। যেমন আপেল, গাজর, শশা, নাশপাতির লম্বা করে কাটা টুকরো তাদের হাতে ধরিয়ে দিন। এর ফলে বাচ্চারা ঘুরতে ফিরতে এগুলো খেতে শুরু করবে।
  • একবারে একটি টুকরোই বাচ্চাদের দিন। তারা যাতে খাবারের টুকরোটি তর্জনী ও বুড়ো আঙুল দিয়ে ধরতে পারে, তা নিশ্চিত করুন। বাচ্চাদের সামনে প্লেট বা থালায় খাবার দিলে, তারা সেখান থেকে এক একটি টুকরো খাবার না-তুলে মুঠো করে অনেকগুলি খাবার তুলে ফেলে। তাই তাদের হাতে এক একটি টুকরো ধরিয়ে দিন। এর ফলে তারা আঙুলের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে বুঝতে পারবে।
  • মা-বাবা যদি বাচ্চাকে খাইয়ে থাকে তা হলে সঠিক পরিমাণ মতো খাওয়াতে পারে। কিন্তু সেই পরিমাণই বাচ্চাদের খেতে দিলে তারা অনেক খাবার নষ্ট করে ফেলবে। তাই বাচ্চা নিজ থেকে খাবার খাওয়া শেখানোর সময় প্রথমে এক চামচ বা দু চামচ খাবার পরিবেশ করুন। সেই খাবার শেষ হলে ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ান। প্রতিবার খাবার শেষ হওয়ার পর বাচ্চাদের উৎসাহিত করুন।
  • কারও দেখাদেখি বাচ্চারা সহজে খাবার খাওয়া শিখতে পারবে। তাই দিনে অন্তত একবার পরিবারের সমস্ত সদস্যদের সঙ্গে বাচ্চাদের খেতে বসান। পাশাপাশি অন্য সময় বাচ্চা একা খেতে বসলেও মা অথবা বাবা তার সঙ্গে বসুন।
  • খাবার-দাবারের চেয়ে বেশি বাসনের প্রতি ঝোঁক থাকে বাচ্চাদের। তাই তাদের জন্য নানান রঙের, সুন্দর বাসন নির্বাচন করতে পারেন। এ ধরনের বাসন বাচ্চাদের নিজে থেকে খাবার খাওয়ায় উৎসাহ বৃদ্ধি করবে।
আরো পড়ুনঃ  জামের বিচি দিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, কিন্তুু জামের বিচি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটা জেনে নিন।

উপকারি লেখা হলে সবার সাথে শেয়ার করুন। এতোটুকুই আমাদের অনুপ্রেরণা। ভালো থাকবেন।